সোমবার ● ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
আফগানদের হারালেই পাকিস্তানকে টপকাবে বাংলাদেশ
Home Page » ক্রিকেট » আফগানদের হারালেই পাকিস্তানকে টপকাবে বাংলাদেশবঙ্গনিউজঃ আফগানিস্তানের বিপক্ষে এর আগে একবারই দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের সেই সিরিজ জিতলেও প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিতে পারেনি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ছয় বছর পর সুযোগটি হাতছানি দিচ্ছে। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এবারের সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি জিততে পারলেই প্রথমবারের মতো আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করবে টাইগাররা। শুধু তাই নয়, শেষ ম্যাচে সফরকারীদের হারাতে পারলে আরও কিছু অর্জন নিজেদের করে নেবেন তামিম-সাকিবরা। আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে আরও ১০ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তানকে হটিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে ছয়ে ওঠার সুযোগ স্বাগতিকদের সামনে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগামীকাল সকাল ১১টায় তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান।
ছয় বছর আগে মিরপুরে আফগানরা হুমকিতে ফেললেও এবার তাদের প্রথম দুই ম্যাচেই হারিয়ে আগেভাগে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। এখন প্রথমবার আফগানদের ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করে প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ। লাল-সবুজ জার্সিধারীদের একবার হোয়াইটওয়াশ করেছিল আফগানরা, সেটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে! ২০১৮ সালে ভারতের দেরাদুনে বাংলাদেশকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিয়েছিল তারা। এবার ঘরের মাটিতে ভিন্ন ফরম্যাটে সেই দুঃসহনীয় কষ্ট ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ। সোমবার সেই লক্ষ্যেই সাগরিকায় আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
হোয়াইটওয়াশের মিশন শতভাগ সফল করতে দুই দিন সময় পেয়েছিল দুই দল। দুই দিনের ঐচ্ছিক অনুশীলনে নিজেদের প্রস্তুত করেছেন তারা। শেষ ম্যাচটি আফগানিস্তানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সুপার লিগে আফগানিস্তানের পয়েন্ট ৬০, তাদের সামনে আরও ১০ পয়েন্ট তুলে নেওয়ার সুযোগ। একইসঙ্গে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ানো যাবে।
আফগানিস্তানের এবারের সফর নিয়ে বাংলাদেশের ৭৭তম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ চলছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ২৯টি সিরিজ জিতেছে, যার মধ্যে ১৫ বার প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছে। এবার আফগানদের হারালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৬। গত দুই ম্যাচের পারফরম্যান্সে কাজটা বাংলাদেশের জন্য কঠিন হওয়ার কথা নয়। সাগরিকায় সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে স্পিনাররা তেমন সুবিধা পাননি। তাই বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেননি রশিদ খান, মুজিব উর রহমান এবং মোহাম্মদ নবী। তবে দুই দলের পেসাররা ঠিকই ভালো করেছেন। তুলনামূলকভাবে আফগানদের চেয়ে বাংলাদেশের পেসাররা যে এগিয়ে সেই প্রতিফলন দেখা গেছে দুই ম্যাচেই। আবার ব্যাটিংয়েও আফগানদের চেয়ে বাংলাদেশের ব্যাটাররা এগিয়ে থাকায় ফল স্বাগতিকদের পক্ষেই এসেছে। এসব ঘাটতি পুষিয়ে তৃতীয় ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানো আফগানদের জন্য বেশ কঠিনই হবে বলা চলে।
চট্টগ্রামে একটি টেস্ট ও চারটি টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল না বাংলাদেশ দলের। তবে সাগরিকায় টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা ওয়ানডে সিরিজে কাজে লাগাতে পারেনি সফরকারীরা। তাই এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হেরে গিয়ে এই মুহূর্তে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শঙ্কায় হাসমতউল্লাহ শহিদির দল।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে রহমানউল্লাহ গুরবাজ বলেছিলেন, ‘তারা (বাংলাদেশ) জানতো যে আমাদের স্পিন আক্রমণ বিশ্বের এক নম্বর। এজন্যই তারা পেসবান্ধব উইকেট বানিয়েছে। অবশ্য এটি বাংলাদেশের হোম সিরিজ, তাই আমরা আশাও করিনি স্পিন সহায়ক উইকেট থাকবে।’
আগের দুই ম্যাচ হারলেও শেষটিতে জয়ের আশা ছাড়ছে না আফগানিস্তান। দলটির উইকেট কিপার-ব্যাটার গুরবাজ বলেন, ‘আমাদের ব্যাটিং বিভাগ ভালো করতে পারেনি। আশা করি, পরের ম্যাচে ভালো করবো। অবশ্য পেস বা স্পিনের ব্যাপার নয়, আমাদের আরও কিছু সময় ব্যাটিং করা দরকার ছিল।’
এদিকে এক ম্যাচ আগে সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় দুই-একটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ। তবে পরিবর্তন হলেও শেষ ম্যাচটি গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে রাসেল ডমিঙ্গো-জেমি সিডন্সের শিষ্যরা। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে সেরা আটে থাকতে হবে। শুক্রবার আফগানিস্তানকে দ্বিতীয় ম্যাচে হারিয়ে ১০০ পয়েন্ট নিয়ে এখন তালিকার শীর্ষে আছে টাইগাররা। তবুও ভবিষ্যতের ঝুঁকি এড়াতে সিরিজের শেষ ম্যাচেও ১০ পয়েন্টের খোঁজে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
আজ সংবাদ সম্মেলনে অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ এমনটাই জানিয়ে গেছেন, ‘বিশ্বকাপে শীর্ষ আট দল কোয়ালিফাই করবে। আমরা ইতোমধ্যে সিরিজ জিতেছি, এটা ভালো কথা। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য– আরেকটি ম্যাচ জিতে ১০ পয়েন্ট নেওয়া। সেটা করতে পারলে দলের ভবিষ্যতের জন্য অনেক ভালো হবে।’
বাংলাদেশ সময়: ১০:৩১:০৬ ● ৫৬৯ বার পঠিত