আগামী বছরে জিডিপি ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » আগামী বছরে জিডিপি ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে
শনিবার ● ১৫ জানুয়ারী ২০২২


ফাইল ছবি- রপ্তানির বড় খাত গার্মন্টস কারখানা

বঙ্গ-নিউজ: চলতি মাসে ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে, পিপিপি, প্রথমবারের মতো দেশের অর্থনীতির আকার হাজার বিলিয়ন ডলার তথা ১ ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক পেরিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের এক প্রক্ষেপণ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

অপরদিকে, সম্প্রতি দেশের অর্থনীতির আকার চলতি মূল্যের ভিত্তিতে ৪১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরে জিডিপির আকার ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দেশের অর্থনীতির আকার মূল্যায়নের মাপকাঠি হলো জিডিপি বা মোট দেশজ উৎপাদন। জিডিপি আবার মূল্যায়ন করা হয় দুটি পদ্ধতিতে। এর একটি হলো বেজ অন কারেন্ট প্রাইস বা চলতি মূল্যের ভিত্তিতে এবং অপরটি হলো বেজ অন পারচেজ পাওয়ার বা ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে। বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের, ডব্লিউইএফ, মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই দুই পদ্ধতিতেই তাদের প্রতিবেদন প্রণয়ন করে থাকে।

২০১৯ সালে লন্ডন-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ বা সিইবিআর যে প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৩০তম। তখন বাংলাদেশের জিডিপির পরিমাণ ৮০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বর্তমানে সেটা আরো এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্য অনুযায়ী, পিপিপির ভিত্তিতে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ছিল মাত্র ২৬৭ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সেটা বেড়ে দেশের অর্থনীতির আকার দাঁড়ায় ৫২০ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ৫০০ বিলিয়ন ডলার বা অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে সময় লাগে প্রায় এক দশক।

আইএমএফের প্রক্ষেপণ বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার গেল বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে ছিল ৯৬৬ দশমিক ৪৮৫ বিলয়ন ডলার। চলতি ২০২২ সালে যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৬১ দশমিক ৫৭১ বিলিয়ন ডলার। সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার দাঁড়াবে ১ হাজার ১৬৪ দশমিক ৮২৫ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া ২০২৪ সালে ১ হাজার ২৭৬ দশমিক শূন্য ২২ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১ হাজার ৩৯৫ দশমিক ৪০৯ বিলিয়ন ডলার। আর ২০২৬ সালে গিয়ে দেড় ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অর্জন করবে দেশের অর্থনীতির আকার। পিপিপির ভিত্তিতে ওই সময় অর্থনীতির আকার হবে ১ হাজার ৫২২ দশমিক ৪৭৮ বিলিয়ন ডলার।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রসঙ্গে একটি জাতীয় দৈনিককে বলেন, বিগত ১২ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অভাবনীয় অর্জন হয়েছে, যা রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারি শুরুর আগের ১০ বছরে বাংলাদেশ ১৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। যা ছিল সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন। এমনকি করোনাকালে বৈশ্বিক অর্থনীতি যেখানে ৩ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতির সব সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী।

বিশ্ব ব্যাংকের বরাত দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলছেন, বেশ ভালো অবস্থানে থাকবে দেশের প্রবৃদ্ধি। সুতরাং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার সুযোগ কম। বর্তমানে দেশের অর্থনীতি একটি টেকসই ও গতিময় অবস্থানে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসীম সাহস ও দূরদর্শিতা কাজে লাগিয়ে তার নির্দেশনায় উন্নয়ন অভিযাত্রায় ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ এবং ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে বলেও প্রত্যাশা করেন মুস্তফা কামাল।

জানা যায়, ২০০৮ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে চলতি মূল্যের ভিত্তিতে জিডিপির আকারে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৬০তম। বর্তমানে বাংলাদেশ ৪১তম অবস্থানে চলে এসেছে। সিইবিআর-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০৩৬ সালে বিশ্বের ২৪তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৯:৩৬ ● ৭৬৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ