সরকারি কোম্পানির শেয়ারে আগুন

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » সরকারি কোম্পানির শেয়ারে আগুন
বুধবার ● ১২ জানুয়ারী ২০২২


ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ

বঙ্গনিউজঃ  ফের চাঙ্গা দেশের শেয়ারবাজার। তার থেকেও বেশি চাঙ্গা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার। এক-দুই সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই দ্বিগুণ হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসই) শেয়ার। এবার তাকে অনুসরণ করছে বাকি সরকারি কোম্পানির শেয়ারগুলো।

মঙ্গলবার দরবৃদ্ধির শীর্ষের পাঁচ কোম্পানির সবগুলোই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন। সবার ওপরে তিতাস গ্যাস। এরপরই আছে- ইস্টার্ন কেবলস, ন্যাশনাল টিউবস, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, উসমানিয়া গ্লাস।

শেয়ারবাজারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি ১৮টি। এই পাঁচটি ছাড়াও বাকিগুলোর দরও বড় বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে ডেসকো, এটলাস বাংলাদেশ, রূপালী ব্যাংক, রেনউয়িক যজ্ঞেশ্বর, শ্যামপুর সুগার সে পথে হাঁটতে শুরু করেছে। পাওয়ার গ্রিড, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস আগে থেকেই সে পথে আছে।

কিন্তু নেপথ্যে কী এমন ঘটেছে, যাতে দল বেঁধে সব সরকারি শেয়ারের দরবৃদ্ধি হুহু করে বাড়ছে - এমন প্রশ্নে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, আদতে বড় এক বিনিয়োগকারীর আগ্রাসী বিনিয়োগ শেয়ারগুলোর দরবৃদ্ধির মূল কারণ।

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ও সাবমেরিন কেবলস কোম্পানির দরবৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের মুনাফা বৃদ্ধির প্রভাব আছে। কিন্তু মুনাফা বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে দরবৃদ্ধির ধারা। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, স্রেফ কারসাজি ছাড়া দরবৃদ্ধির নেপথ্যে তেমন কিছুই নেই।

সরকারি শেয়ারগুলোর দরবৃদ্ধির ধারার প্রভাব অন্য শেয়ারেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বাজারের আরও কয়েকটি কারসাজি চক্র অন্য শেয়ারের দর বাড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সেসব দেখেও দেখছে না। ফলে কারসাজির মাত্রা লাগামহীন হয়ে পড়েছে।

দুপুর ১২টায় সবার ওপরে থাকা তিতাস গ্যাসের শেয়ার আজকের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দর ৪৯ টাকা ৬০ পয়সায় কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। মাত্র ১০ কার্যদিবস আগেও শেয়ারটি ৩৫ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছিল। অর্থাৎ দুই সপ্তাহ ব্যবধানে দর বেড়েছে ৪২ শতাংশ।

ইস্টার্ন কেবলসের দরবদ্ধির ধারা আজই শুরু হয়েছে। সোমবারের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ দর বেড়ে ১৪৮ টাকা ৮০ পয়সায় কেনাবেচা হচ্ছে। অবশ্য দুপুর ১২টায় এর কোনো বিক্রেতা ছিল না। অর্থাৎ এখনই কেউ শেয়ার বিক্রি করতে রাজি নন।

আজকের দরবৃদ্ধির তৃতীয় অবস্থানে থাকা ন্যাশনাল টিউবসের শেয়ার ১০০ টাকা ৪০ পয়সা দরে কেনাবেচা হচ্ছিল। ডিসেম্বরের শেষ কার্যদিবসেও শেয়ারটি ৮০ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছিল। সে হিসেবে দর বেড়েছে ২৫শতাংশ।

চলতি শেয়ারবাজারের সবচেয়ে আলোচিত শেয়ার বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন। গত ২৩ ডিসেম্বরও শেয়ারটি ৫০ টাকার কমে কেনাবেচা হয়েছিল। এ শেয়ার কেনার তেমন আগ্রহ ছিল না কারো মধ্যে। ১৫ কার্যদিবস পর আজ শেয়ারটির দর ১২৭ টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ আড়াইগুণ। অথচ এখন এ শেয়ার কেনার ক্রেতার অভাব নেই।

মঙ্গলবার দরবৃদ্ধির পঞ্চম অবস্থানে উসমানিয়া গ্লাসের শেয়ার। প্রায় ১০ শতাংশ দর বেড়ে ৬৩ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।

শুধু সরকারি শেয়ার নয়, আজ অধিকাংশ শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছে। নতুন করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার লকডাউন বা কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে পারে- এমন গুঞ্জনে গত রোববার এবং সোমবারের লেনদেনের প্রথমে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব ছিল শেয়ার লেনদেনে।

কিন্তু সোমবার লেনদেনের মাঝেই যখন পরিস্কার হয়- লকডাউন আসছে না, আবার বিধি-নিষেধও অতটা কঠোর হবে না, তখনই শেয়ারদর বাড়তে শুরু করে। যার প্রভাব আজ মঙ্গলবার বেশ ভালোভাবেই দেখা যাচ্ছে।

দুপুর ১২টায় দিনের লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা শেষে ডিএসইতে ২৪৮ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। বিপরীতে দর হারিয়ে ৮৫ শেয়ারকে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে, দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল ৪ শেয়ার।

অধিকাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধির ধারায় প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৭৪ পয়েন্ট বেড়ে ৭০৬৮ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় পর সূচকটি এ মাইলফলক কেনাবেচা হয়েছে ১ হাজার ২২ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টার এ লেনদেন সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ। সোমবারও একই সময়ে কেনাবেচা হয়েছিল ৬০০ কোটি টাকারও কম শেয়ার।

বাংলাদেশ সময়: ১২:১৪:৫৯ ● ৭৯৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ