বঙ্গনিউজঃ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (বেবিচক) একটি হেলিপোর্ট নির্মাণের প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার পর এর ডিটেইলড ফিজিবিলিটি স্টাডি বা পূর্ণাঙ্গ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে বিস্তারিত সমীক্ষার প্রয়োজন।
সূত্র জানায়, ঢাকার বিমানবন্দরের কাছে কাওলায় প্রায় ১০০ বিঘা জায়গার ওপর ৫৬টি হেলিকপ্টারের পার্কিং সুবিধা সংবলিত হেলিপোর্ট নির্মাণের একটি প্রস্তাব সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে পাঠায় বেবিচক। এটি বাস্তবায়নে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয় ৫০৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুন থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ রয়েছে ডিটেইলড প্রজেক্ট প্ল্যানিংয়ে (ডিপিপি)। বেবিচক নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব করে।
সূত্র জানায়, গত অক্টোবরে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রকল্প প্রস্তাবনা বিবেচনা কমিটির সভা হয়। ওই সভায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগে বিস্তারিত সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তাছাড়া প্রকল্পের আইটেমভিত্তিক ব্যয় আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) সুকেশ কুমার সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিমানবন্দরের সন্নিকটে হেলিপোর্ট নির্মাণের যে প্রস্তাবটি বেবিচক পাঠিয়েছিল, সেটির ডিটেইলড ফিজিবিলিটি স্টাডির পর পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে। এই কর্মকর্তা জানান, যে কোনো প্রকল্প শুরুর আগে বিস্তারিত সমীক্ষা ও যথাযথ নকশা করা জরুরি। সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকায় বৃহৎ পরিসরে সুনির্দিষ্ট কোনো হেলিপোর্ট না থাকায় বেসরকারি খাতের হেলিকপ্টারগুলো উড্ডয়নের জন্য প্রতিবার বেবিচক থেকে অনুমতি নিতে হয়। এটি নির্মিত হলে হেলিকপ্টার উড্ডয়নের ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে আর পৃথকভাবে অনুমতি নিতে হবে না। এয়ারপোর্টের মতো এর ট্রাফিক কন্ট্রোল পরিচালিত হবে হেলিপোর্টের মাধ্যমে। এ লক্ষ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গোলচত্বর লাগোয়া দক্ষিণে রেললাইনের পূর্ব পাশে বেবিচকের নিজস্ব জমিতে প্রস্তাবিত হেলিপোর্ট নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক মানের এই হেলিপোর্ট নির্মাণে নির্দেশনা দিয়েছেন। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মানের এই হেলিপোর্ট নির্মাণে ট্যাক্সিওয়ের জন্য ২ হাজার ৬১৭ বর্গমিটার, ভিআইপি কার পার্কিংয়ের জন্য ১ হাজার ৫১২ বর্গমিটার, এক্সেস রোডের জন্য ১৮ হাজার ৮৭০ বর্গমিটার জায়গার উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া হ্যাঙ্গার এরিয়া ১৬ হাজার ২২৬ বর্গমিটার, টার্মিনাল ভবন ১ হাজার ৮৭৭ বর্গমিটার, ফায়ার স্টেশন ও অন্যান্য ভবন নির্মাণ ছাড়াও বৈদ্যুতিক এবং নিরাপত্তা যন্ত্রাংশ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বেবিচক। প্রকল্পটির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বেবিচকের উপ-পরিচালক (ডেভেলপমেন্ট ও মনিটরিং) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হেলিপোর্ট নির্মাণে মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তারা কিছু পর্যালোচনাসহ সেটি ফেরত পাঠিয়েছে। এখন আমরা বিস্তারিত ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সেটি সম্পন্ন হলে পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।