বঙ্গনিউজঃ ডিজেলচালিত দূরপাল্লার বাস ও নগর পরিবহনের ভাড়া নতুন করে নির্ধারণের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় সড়কে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও পরিবহন মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তেলের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাজধানীর বিআরটিএ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সড়ক মহাসড়কে বাস চলাচল শুরু হয়।
ওই বৈঠকের পর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ সারাদেশে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট তুলে নিয়ে বাস চালানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমার আহ্বান থাকবে এখন থেকে বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হোক। আমি বাসের মালিকদের অনুরোধ করব, ধর্মঘট প্রত্যাহার করে যেন দেশে স্বাভাবিক অবস্থা হয়। সব জেলা থেকে যেন বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়।’
হিমাচল পরিবহনের ঢাকা-নোয়াখালী রুটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফতাব উদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ঢাকা-নোয়াখালী রুটে আমাদের বাস চলা শুরু হয়েছে।’
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক মালিক সমিতির চেয়ারম্যান ও শ্যামলী এনআর পরিবহনের মালিক রাকেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, বিআরটিএ ভবনে মিটিং শেষ হওয়ার পর আমাদের বাস চলা শুরু হয়ে গেছে।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দূরপাল্লার বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৪২ পয়সা থেকে বেড়ে এক টাকা ৮০ পয়সা হয়েছে। মহানগরে বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে দুই টাকা ১৫ পয়সা।
এরআগে, রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর মহাখালীতে বিআরটিএ ভবনে পরিবহন মালিক ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। পরিবহন মালিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
তারও আগে, বুধবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় জ্বালানি মন্ত্রণালয়। লিটারে দাম বাড়ে ১৫ টাকা। রাতেই তা কার্যকর হয়। এর ফলে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের নতুন দর হয় প্রতি লিটার ৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৬৫ টাকা।
ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর পর বাসভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে বাস চলাচল বন্ধ হয়েছে যায়। পণ্যবাহী যান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন মালিক ও শ্রমিকরা।
গত চার দিনের অঘোষিত এই পরিবহন ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশ। ঘর থেকে যারা বের হয়েছেন, তারা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন। পথে পথে ছিল দুর্ভোগ। শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়। ভর্তি ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা পড়েন আরও বিপাকে। কয়েক গুণ ভাড়া দিয়ে বিকল্প উপায়ে তারা কেন্দ্রে পৌঁছেন।
যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাস না পেয়ে অফিসগামীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, লেগুনা চলাচল করলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কমল। এ সুযোগে এসব যানবাহনে নেওয়া হয় বেশি ভাড়া। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছেন যাত্রীরা।